আজ ১৪৪৫ হিজরি সনের রমজান মাসের তৃতীয় দশকের বিদায়কালীন শুক্রবার তথা শেষ জুমার দিন ‘জুমাতুল বিদা’। আর পবিত্র মাহে রমজানের ২৫ তারিখ। পবিত্র মাসের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি আমরা। আজই হবে এ বছরের রমজানের শেষ জুমা। এ দিনটি জুমাতুল বিদা নামে আখ্যায়িত। অবশ্য অভিধাটি পরিচিত হয়েছে সাম্প্রতিককালে। নিকট অতীতেও ‘জুমাতুল বিদা’ পরিভাষার ব্যবহার কিংবা আলাদাভাবে মূল্যায়ন করার নজির পাওয়া যায় না। তবে মৌলিক চেতনা ও ভাবধারা বিবেচনায় দিনটি গুরুত্বের অধিকারী হওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত থাকতে পারে না।
সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর তুলনায় জুমার দিনের বৈশিষ্ট্য, রমজান মাসে তাতে মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং রমজানের শেষ প্রান্তের বৈশিষ্ট্য-এ তিনের সমন্বয়ে এ দিনটির আলাদা মর্যাদা প্রমাণ হয়। উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য সপ্তাহের প্রতিটি দিনেই ইবাদতের বিধান রয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে বা মসজিদে সমবেত হয়ে সম্মিলিত আকারে আল্লাহর ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা মুসলমানদের প্রাত্যহিক কর্তব্য। তবুও সপ্তাহের একটি দিনে আরও বড় আকারে সম্মিলিত ইবাদত বা জুমার নামাজের বিধান মুসলিম উম্মাহর স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্য যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমন সামাজিক ও সামষ্টিক পর্যায়ে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে পরিবেশ তৈরি করে।
আগামীকাল শনিবার ২৬ রমজান দিবাগত রজনিতে ‘লাইলাতুল কদর’ পালন করা হবে, যা আমাদের দেশে ‘শবে কদর’ নামে পরিচিত। এর গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য অপরিসীম। সাপ্তাহিক জুমার নামাজ মুসলমানদের বৃহত্তর জামাতে অনুষ্ঠিত হয়। রমজান মাসের জুমাবার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতময়। জুমাতুল বিদাসহ মাহে রমজানের প্রতি জুমাবারে ইবাদত-বন্দেগিতে অধিকতর সওয়াব লাভের সুবর্ণ সুযোগ থাকে। রমজান মাসের শেষ শুক্রবার সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমান একটি মাস ত্যাগ-তিতিক্ষার সঙ্গে সিয়াম সাধনার পর এ দিনটিতে জুমার নামাজ আদায় করে মাহে রমজানকে বিদায় সম্ভাষণ জানান। পবিত্র কুরআনে শুক্রবারের নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জোরালো দিকনির্দেশনা দিয়ে সব মুসলমানকে এই দিন মসজিদে একত্র হয়ে জুমার নামাজ আদায়ের তাগিদ প্রদান করা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলব্ধি করো।’ (সুরা জুমা, আয়াত : ৯)