নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার কাশিপুর এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম উদ্দিন হত্যা মামলার রায়ে ৪ আসামীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত লাশ গুম করার অভিযোগে প্রত্যেক আসামীকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ড দেন। মামলায় অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় ৩ আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এই রায় প্রদান দেন। রায় প্রদানকালে ৭ আসামীদের মধ্যে ৩ আসামী উপস্থিত ছিল এবং ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামী উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক রয়েছে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হলেন- সাদেকুর রহমান, মো: ইকবাল হোসেন, সোহাগ এবং বাবু কাজী। বেকসুর খালাস প্রাপ্তরা হলেন- মোক্তার হোসেন, মো: মেহেদী ও আবুল হোসেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট বন্ধু ইকবালের কাছে পাওনা ৫ লাখ টাকা আদায় করতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ফতুল্লার কাশিপুর দেওয়ানবাড়ী এলাকার হাজী আফসার উদ্দিনের ছেলে ইলেকট্রনিক্্র ব্যবসায়ী হালিম উদ্দিন। এর একদিন পর ১৭ আগস্ট ডোবা থেকে হাত-পা বিহীন বস্তাবন্দী অবস্থায় হালিম উদ্দিনের পাঁচ টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত হালিম উদ্দিনের ছোট ভাই শামীম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া আসামী সাদেকুর রহমান হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে এবং জড়িত আসামীদের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে সে জানায়, পাওনা টাকার জন্য চাপ দিলে বন্ধু ইকবাল হোসেন তার বাসায় ডেকে নিয়ে হালিম উদ্দিনকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাতের পর গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ ৫ টুকরো করে সদর উপজেলার কাশিপুর এলাকায় ডোবায় ফেলে দেয় আসামীরা। এই ঘটনার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ ৭ জনকে আসামী এবং ২৫ জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
তবে এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের স্বজনরা।#